জামিআর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
জামিআ রাব্বানিয়া এক ব্যাথার দান; সুদীর্ঘ ফিকির ও দরদে দিলের বহিঃপ্রকাশ। অব্যক্ত এই যন্ত্রণা ও দিলের তড়প পার্থিব কোন মোহ-মায়াকে কেন্দ্র করে নয়, নয় কোন পদ-পদবীর বাসনায়; কিংবা নিজেকে মেলে ধরার স্বপ্ন বিলাসের নেশায়। এ ব্যথা দ্বীনের জন্য; এ দরদ ইলমের জন্য।
গতানুগতিক অনেক প্রতিষ্ঠানের অন্তসারশূন্য শিক্ষাব্যবস্থাপনার ফলে ইলমের দৈন্যদশায় প্রতিনিয়ত যিনি হতেন মর্মাহত, অবহেলা-অযত্ন আর সঠিক পরিচর্যার অভাবে সুপ্ত প্রতিভাধারী বহু মেধাবীর হারিয়ে যাওয়া চরম পীড়া দিতো যাকে, ইলমী কাননের সেই দরদী মালী জামিআর প্রাণভোমরা প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম, আরেফবিল্লাহ মুফতি নজরুল ইসলাম ভাসানী (দামাত বারাকাতুহুম)।
শিক্ষা জীবনেই তিনি মনের গহীন কোণে সুপ্ত বাসনা লালন করতেন, আহা! আবার যদি এমন কোন মাদরাসা কায়েম হতো, যার শিক্ষার্থীরা ইলমের নেশায় বিভোর হয়ে থাকবে! যারা হবে জ্ঞান সাগরের ডুবুরি! দ্বীন প্রতিষ্ঠার তরে নিজেদেরকে যারা গড়ে তুলবে মর্দে মুজাহিদ রূপে।
যেখান থেকে আবির্ভূত হবে এমন একদল যোগ্য নায়েবে রাসূল, যারা কুরআন-সুন্নাহ তথা ধর্মীয় জ্ঞানে গভীর পাণ্ডিত্যের পাশাপাশি তাকওয়া-তাহারাত, যুহদ ও পরহেজগারিতে হবে সর্বসেরা। বেশ-ভূষা, চাল-চলন, আচার-উচ্চারণ এবং আদব-শিষ্টাচারে হবে যারা সালাফের বাস্তব নমুনা। জ্ঞান-বিজ্ঞান, ইলম ও হেকমতে যারা হবে আকাবিরের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি!
হযরত বড় হুজুরের অধ্যাপনার তৃতীয় বৎসর চলছে। দীর্ঘদিনের এই আকাঙ্ক্ষা যখন আরো বেগবান ও ঘনীভূত হলো, তখন তিনি তাঁর জীবনের আধ্যাত্মিক রাহবার যুগশ্রেষ্ঠ বুযুর্গ আরেফ বিল্লাহ আল্লামা শাহ আব্দুল মZxন বিন হুসাইন হযরত ওয়ালা ঢালকানগর (দামাত বারাকাতুহুম) এর খেদমতে এই পূণ্য ইচ্ছাটি স্ববিনয়ে ব্যক্ত করলেন| হযরত আকাঙ্ক্ষার কথা শ্রবণ K‡i কিছুক্ষণ ধ্যান মৌন হয়ে রইলেন| অতঃপর মাথা তুলে দরাজ কন্ঠে বলে উঠলেন, যাও "তাওক্কুলান আলাল্লাহ" তথা আল্লাহর উপর ভরসা করে শুরু করো। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছিল, হযরত ওয়ালা হয়তো ধ্যান মগ্নতায় আসমানী কোন ইশারা পেয়েই এতটা দীপ্ত কন্ঠে অনুমতি প্রদান করেছিলেন।
যেভাবে সুচনাঃ
আধ্যাত্মিক মুরব্বীর স্বতস্ফূর্ত অনুমতি পেয়ে হযরত বড় হুজুর বেরিয়ে পড়লেন মাদরাসার জন্য ভাড়া বাড়ীর অনুসন্ধানে| কিন্তু সময়টা ছিল বড়ই নাযুক! ২০০৫ সাল। যখন ইসলামের পুণ্যময় বিধান জিহাদের নাম ভাঙ্গিয়ে জে এম বি গ্রুপ সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের লক্ষে তেষট্টি জেলায় একযোগে সিরিজ বোমা হামলা পরিচালনা করেছিল। বিভিন্ন ক্ষেত্রে উলামায়ে কেরাম তখন চরম হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন,আলেম-ওলামা ও ইসলামপন্থীদের প্রতি জনসাধারণের ছিল তীর্যক দৃষ্টি| এমন উদ্ভট পরিস্তিতিতে মাদরাসার জন্য বাড়ী ভাড়া পাওয়াটা ছিল দুঃসাধ্য ব্যপার!কোনো বাড়ীর ব্যপারে আলোচনা হলেও মাদরাসার কথা শুনলে বাড়ীর মালিক পিছু হটে যেতো, এরপরও অনুসন্ধান অব্যাহত থাকে।
কখনো কখনো হযরত থমকে যেতেন, মাদরাসা করার স্বপ্ন হতাশায় ছেয়ে যেতো,আশার প্রদীপ নিভু নিভু করতো, কিন্তু হযরতের বন্ধুবর পীর সাহেব ঢালকানগর (দামাত বারাকাতুহুম)এর বিশিষ্ট খলীফা মাওলানা তৈয়ব আশরাফ সাহেবের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় আবvরো নব-উদ্যমে অনুসন্ধান Ki‡Z থাকেb|
সময় বয়ে চলছে আপন গতিতে,কিন্তু বহু দিনের লালিত স্বপ্ন যে অধরাই থেকে যাচ্ছে! যেখানে রমজানের পর পরই মূল কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করার ইচ্ছা,সেখানে রমজান প্রথম দশক অতিক্রম করে দ্বিতীয় দশকে উপনীত, কিন্তু এখনো বাড়ীর কোন ব্যবস্থা হচ্ছে না|
আসলে, কল্যাণকর ও মঙ্গলজনক কোন কাজই আসমানী ইশারা ছাড়া হয় না, হতে পারে না।মহান আল্লাহ পাক যখন যা যেভাবে সম্পাদন করার ইচ্ছা করেন ঠিক তখনই তা সেভাবে সম্পাদিত হয়ে থাকে, এক্ষেত্রেও এর ব্যত্যয় ঘটলো না|
এরই মাঝে একদিন হযরতের খাস দোস্ত মেরাজ নগর মাদরাসার সুযোগ্য মুহাদ্দিস মাওলানা মুজিব সাহেবের সঙ্গে সাক্ষাৎ, হযরত তাঁর কাছে হৃদয়ের আকুতি ব্যক্ত করলেন, তখন তিনি বলে উঠলেন, আমার জানামতে যাত্রাবাড়ীর মাতুআইলস্থ উত্তর রায়ের বাগ দোতলা মসজিদ সংলগ্ন একটি টিনশেড বাড়ী রয়েছে,বাড়ীর মালিক একজন আলেমে দ্বীন, মাদরাসার জন্য ভাড়া দিতে অত্যন্ত আগ্রহী। এ কথা শুনে হযরত (বড় হুজুর)কিছুটা স্বস্তি বোধ করলেন। অতঃপর ২২শে রমজান মীর হাজীর বাগে অবস্থিত বাড়ীওয়ালার বন্ধু জনাব মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ সাহেবের মসজিদ সংলগ্ন হুজরায় হযরত মুহতামিম সাহেব, মাওলানা মুজিব সাহেবসহ মোট চারজন বাড়ী ভাড়া-চুক্তি সম্পাদনের উদ্দেশ্যে একত্রিত হলেন,পাঁচ হাজার টাকা অগ্রীম বায়না দিয়ে চুক্তি সম্পন্ন হলো,বায়নার সেই পাঁচ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে প্রদান করেছিলেন হযরতের বন্ধুবর জনাব আলহাজ্ব ইসমাইল বাদামতলী,অবশ্য পরবর্তীতে সেই টাকা তিনি আর ফেরত নেননি বরং মাদরাসায় দানের নিয়ত করে নিয়েছেন।
প্রতিষ্ঠাকালীন সেই শুভ সময়ে প্রদত্ত এই অর্থকে আল্লাহ পাক তাঁর নাজাতের যরীয়া বানিয়ে দিন। আমীন।
কার্যক্রম শুরু:
মোটামুটি প্রস্তুতি নিয়ে রমজান শেষে ৮ই শাওয়াল ভর্তি কার্যক্রম শুরু হলো, মকতব হিফজ ও কিতাব বিভাগে নাহবেমীর জামাত পর্যন্ত ভর্তি নেওয়া হলো,মহান আল্লাহ পাকের কী যে মেহেরবানী!প্রত্যেক বিভাগেই কল্পানাZxত সংখ্যক ছাত্র ভর্তি হয়ে গেলো!
টিনশেডটি ছিল পাঁচ iæম বিশিষ্ট, সামনে উঠানসদৃশ একটি উন্মুক্ত জায়গা ছিল, ছাত্রদের ধারনক্ষমতা না হওয়ায় বছরের শুরুতেই টিনশেডের সাথে একটি বারান্দা সংযুক্ত করতে হলো,সকল বিভাগেই যোগ্য থেকে যোগ্যতর উস্তাদ নিয়োগ দেওয়া হj, কিতাব বিভাগে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল ঢালকানগর পীর সাহেবের স্নেহধন্য খলীফা মাওলানা আবদুর রহমান শরীয়তপুরী (দামাত বারাকাতুহুম)কে,তিনি অত্যন্ত ইখলাস ও আন্তরিকতার সাথে যাবতীয় কার্যক্রমে মুহতামিম সাহেবের অন্যতম সnযোগী
হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ f’wgকা পালন করেন।
সবক ইফতিতাহঃ
২০০৫ এর ২৫ শে নভেম্বর। জামিআর ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন। সেদিন জামিআর ইফতিতাহ তথা সবক উ‡Øvধনের তারিখ নির্ধারিত হলো,অত্র জামিআর পৃষ্ঠপোষক বড় হুজুর (দামাত বারাকাতুহুম) এর মহান পীর ও মুর্শিদ আল্লামা শাহ আব্দুল মতxন বিন হুসাইন (দামাত বারাকাতুহুম) তাশরীফ আনলেন, স্টেজে উঠে কুরসীতে সমাসীন হয়ে খুতবা পাঠ করতেই হযরত ঢুকরে কেঁদে উঠলেন! মাসূম বাচ্চার ন্যায় নিরন্তর কেঁদেই চলেছেন! কান্না যেন আর থামছেই না! আuখিযুগল থেকে বাঁধভাঙা প্লাবনের ন্যায় অশ্রুধারা গন্ডদেশ বেয়ে যমীন স্পর্শ করছিল, আর মনে হচ্ছিল এ যেন রব্বে কারীমের পক্ষ থেকে মাকবূলিয়্যাতের সুস্পষ্ট স্বীকৃতি। শুরু হলো পড়ালেখা,জ্ঞান সরোবরে অবগাহন করে সময় কাটছে তালিবুল ইলমদের, মধুমক্ষিকার গুঞ্জনে মুখরিত গোটা পরিবেশ,,
কষ্টের নজরানাঃ
হযরত বড় হুজুরের ফিকির, নিরলস প্রচেষ্টা,ছাত্রদের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং গভীর রাতের দুআ-কান্নাKvটির ব‡দŠjতে প্রথম বছরেই পড়ালেখা, ও আমল আখলাকের এমন এক নূরানী পরিবশে তৈরি হয়েছে, যেন আকাবিরের সোনালী অতীতে ফিরে এসেছে,প্রতিটি ছাত্রের মাঝে যেন আকাবিরের রং প্রস্ফুটিত হচ্ছে।
ফলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইলম অন্বেষণের প্রej তৃষ্ণা নিয়ে ছুটে আসে তালিবানের ইলমের নূরানী কাফেলা। ছাত্র সংখ্যার তুলনায় জায়গা ছিল একেবারেই অপ্রতুল,তাই বাধ্য হয়ে সামনের উম্মুক্ত জায়গায় বারান্দা বৃদ্ধি করা হচ্ছিল,, বৃদ্ধি n‡Z n‡Z এক পর্যায়ে পূর্ণ খালি জায়গাটি টিনের বিশাল এক চালায় পরিণত হয়,
এক চালাটি ছিল মাথা ছুঁই ছুঁই, গ্রীষ্মকালের প্রচন্ড গরমে ফ্যানের ব্যবস্থা ছিল ব্যর্থ চেষ্টা,,কারY গরমের তীব্রতায় ফ্যানের বাতাস লু হাওয়ায় রূপ নিতো
গভীর রাতে সেই বাতাস কিছুটা আরামদায়ক হলেও বিপত্তি ঘটতো বিদ্যুৎ চলে গেলে,, তখন ভেতরে অবস্থান করা দুঃসাধ্য হয়ে উঠতো,গরমের তীব্রতায় বাইরে এসে পায়চারি করে ছাত্র-উস্তাদের বিনিদ্র রজনী কাটানোর ঘটনাও ঘটেছে বহুবার ।
বাথরুম,অজু-ইন্তিঞ্জাখানা এতটা স্বল্প পরিসরে ছিল যে, প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণে ছাত্ররা রীতিমতো বিড়ম্বনার শিকার হতো, ছাত্রদের wf‡o গোটা পরিবেশটা গিজগিজ করতো| সেই দুর্দিনে ছাত্র-উস্তাদদের অবর্ণনীয় কষ্টের কথা মনে পড়লে আজও আমরা অশ্রুসিক্ত হয়ে যাই, সেই নাযুক পরিস্থিতির বিবরণ আসলে কলমের আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব নয়, যারা সেই পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন তারাই বলতে পারবে কতটা কষ্ট ও বেদনার ছিল সেই দিনগুলো। এর মধ্যেই আহলে সুফফার যোগ্য উত্তরসূরী নববী দরবারের অতিথিবৃন্দ তালিবানে ইলম Ôরোহবানুল লাইল, I ফুরসানুন নাহার "এর ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়ে জ্ঞান সাধনায় কঠোর অধ্যবসার মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করতো। তাদের কন্ঠে যেন উচ্চারিত হচ্ছিল,
Òজীর্ণ-শীর্ণ, রিক্ত-নিস্ব তবুও আমরা ধনী
ফকীরীর মাঝে আমীরী শান শুধু আমরা জানিÓ
কিন্তু এমন কঠিন পরিবেশেও ছাত্রদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও মেহনত-মোজাহাদা,শিক্ষকদের সার্বিক তË¡বধান, সর্বোপরি আল্লাহ পাকের অশেষ অনুগ্রহে মাদরাসা পরীক্ষায় শতভাগ সফলতার পাশাপাশি যখন বেফাকের ঈর্ষYxয় ফলাফল প্রকাশিত হতো, তখন ছাত্র-শিক্ষক সকলের দিল খুশিতে ভরে উঠতো। এভাবে দেখতে দেখতে সেই ভাড়া বাড়ীতে পাঁচটি বৎসর অতিক্রান্ত হয়ে গেলো। প্রত্যেক বছরান্তে একেক জামাত করে বাivনো হচ্ছিল, এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছাত্র সংখ¨vও কল্পানাতিত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছিল, ফলে মাদরাসার জন্য একটি নিজস্ব জায়গা ও নিজস্ব ভবন সময়ের অপরিহার্য প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায়, কিন্তু এ যে বিরাট ব্যয়বহুল ব্যvপার! মাদরাসার তো উল্লেখযোগ্য তেমন কোন ফান্ড নেই, নেই নিজস্ব জমি সংগ্রহের বাহ্যিক কোন ব্যবস্থা!!
তবে গোটা ভূখণ্ডের মালিক আল্লাহ পাক চাইলে কোন উপায় উপকরণ ছাড়াও সবকিছুর ইন্তেযাম করতে পারেন, আল্লাহ পাকের প্রতি এ অগাধ বিশ্বাস জামিআর প্রাণ পুরুষ বড় হুজুর সহ সকল তালিবুল ইলমের অন্তরে বদ্ধমূল ছিল।
নিজস্ব জমির ইন্তেজামঃ
ছাত্র-উস্তাদ সকলের দৈনন্দিন মামূল ছিল দোআ-কান্নাকাটি, সে সময়ের একমাত্র সম্বলই ছিল এই রোনাজারি,আর মুমিনের চোখের অশ্রু আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয় হয়ে থাকে, তাইতো অল্প কিছুদিনের মধ্যেই জামিআর জন্য আল্লাহ পাক একটা নিজস্ব জমির ব্যবস্থা করে দিলেন। ঐ সময়ে জামিআর মক্তব বিভাগের শিক্ষক কারী সাখাওয়াত সাহেবের মাধ্যমে বড় হুজুর (দামাত বারাকাতুহুম)অবগত হলেন যে, নাঃগঞ্জের জালকুড়ী নিবাসী হাজী AvjvDÏxb সাহেব মাদরাসার জন্য একখন্ড জমি দান করতে আগ্রহী, তখন বড় হুজুর ঐ মহল্লার তৎকালীন ইমাম মাওলানা মুনীরুল ইসলাম ফারুকী সাহেবের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলেন, অতপর হাজী আলাউদ্দিন সাহেব রায়ের বাগে এসে জামিআর সার্বিক পরিস্থিতি ও ছাত্রদের নূরানী জমায়েত দেখে মুগ্ধ হন এবং তৎক্ষণাrই জামিআর নামে জমি প্রদানের জন্য প্রস্তুত হয়ে যান, কিন্তু বড় হুজুর বললেন, আমার মুরব্বী হচ্ছেন ঢালকা নগরের হযরত ওয়ালা (দামাত বারাকাতুহুম) যদি আপনি জামিআর নামে জমি প্রদানে আগ্রহী থাকেন, তাহলে আপনি আমার হযরতের হাতেই বুঝিয়ে দিবেন। হাজী সাহেব তৎক্ষণাৎ ঢালকা নগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যান এবং হযরত ওয়ালার সামনে নিয়তকৃত জমিটি জামিআ রাব্বানিয়ার নামে দান করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। হযরত ওয়ালা বললেন, হাজী সাহেব!আপনি কিন্তু দান করছেন একমাত্র আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি ও পরকালের অনন্ত সফলতার জন্য, দুনিয়াবী কোন পদ-পদবীর ইচ্ছা থাকতে পারবে না। তখন হাজী সাহেব বড় হুজুর সহ কতিপয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে নিঃশর্তভাবে একমাত্র পরকালে নাজাতের আশায় জমিটি জামিআর নামে প্রদান করতে সম্মত হন এবং অকুণ্ঠচিত্তে ঘোষণা করেন, আমি পার্থিব কোন জশ-খ্যাতি বা পদ-পদবী চাইনা, আমি চাই আলেম-ওলামা ও তালিবুল ইলমদের আন্তরিক দোআ এবং পরকালের চিরমুক্তি।হযরত ওয়ালাও তাঁর আন্তরিকতায় খুশি হয়ে জমি গ্রহণের আবেদন মঞ্জুর করেন।
অতঃপর ২০০৯ সালের ৩০ শে আগস্টে জামিআর নিজস্ব জমি দলীলের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন হয়,জমি রেজিস্ট্রেশনের সময় মেজিস্ট্রেটের সামনে হাজী সাহেব আবেগাপ্লুত হয়ে বড় হুজুরের হাত চেপে ধরে বললেন, হুজুর! আল্লাহ যেন আমাকে দেখিয়ে নেন! (আল্লাহ পাক হাজী সাহেবকে উভয় জাহানে সৌভাগ্যবান করুন। আমীন। )
এবার জমি ভরাট ও ঘর নির্মাণ করে নিজস্ব জায়গায় বসে যাওয়ার পালা, কিন্তু এখানেও ফান্ডের বেহাল অবস্থা, বাহ্যিক কোন উপায়ই তখন ছিলনা। তাই সর্বপ্রথম জামিআর উস্তাদগণ নিজ নিজ সাধ্যানুযায়ী জমি ভরাটের এই বিশাল কাজে অংশগ্রহণ করলেন, অতঃপর তালিবুল ইলমরাও এই মহান কর্মযজ্ঞে স্বতস্ফুর্তভাবে শরীক হলো,ভরাট কার্যক্রমের সূচনা এভাবেই হয়, আল্লাহ পাকের মেহেরবানীতে প্রায় সাত শতাধিক U&ªvK বালু ফেলে জমি ভরাট করা হয়,,
এর মাঝে একদিন জামিআর পরম হিতাকাঙ্ক্ষী আল মদিনা নার্সিং হোম (রায়ের বাগ) এর স্বত্বাধিকারী জনাব মীযানুর রহমান সাহেব তাঁর বন্ধু জনাব আলহাজ্ব মশিউর রহমান তোতা মিয়া সাহেবকে নিয়ে রায়ের বাগে আসেন,,জামিআর সার্বিক বিষয়ে মুগ্ধ হয়ে তিনি জামিআর নিজস্ব জমিতে ঘর নির্মাণের খেদমত করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন,, এবং ঘর নির্মাণের সিংহভাগ খরচ তিনি একাই বহন করেন,, জামিআর সবকিছু তখনও রায়ের বাগে,সরেজমিনে থেকে নিজস্ব জায়গায় ঘর নির্মাণের যাবতীয় কাজ পরিচালনা করেছেন জালকুড়ীস্থ জনাব আলহাজ্ব আব্দুল মুমিন সাহেব । আল্লাহ তাআলা সকলকে দুনো জাহানের কল্যাণ দান করেন। আমীন।
আল বিদা রায়ের বাগ!!
জালকুড়ীতে ঘর নির্মাণ মোটামুটি সম্পন্ন,এবার বিদায়ের পালা, রায়ের বাগ থেকে জামিআর আনুষ্ঠানিক বিদায়ের প্রাক্কালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়, কারণ জামিআর অস্তিত্ব মিশে আছে এই মাটির সাথে, বহু চড়াই উৎরাইয়ের নিরব সাক্ষী এই ভুমি, তাই উস্তাদ ছাত্র সকলে অশ্রুসিক্ত নয়নে ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে সেই জীর্ণ পরিবেশের দিকে শেষ নজর বুলিয়ে জালকুড়ীর পথে পা বাড়ান, ইথারে যেন ধ্বনিত হলো "আল বিদা রায়ের বাগ!আল বিদা!!
এখানে আসার পরও প্রাথমিক পর্যায়ে বড় শোচনীয় অবস্থা ছিল, ফান্ডের দূর্বলতার দরুY ঘরের দরজা, জানালাসহ স্বাভাবিকভাবে বসবাস উপযোগী অনেক কিছুরই অভাব ছিল, ঝড় বাদল ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের সাথে আলিঙ্গন করে কেটেছে বহু বিনিদ্র রজনী, জনমানবশূন্য এলাকা ছিল মরুভূমির ন্যায়,বছরের প্রায় পাঁচ মাস ধরে জলাবদ্ধতার ফলে যাতায়াত ব্যবস্থা ছিল চরম দূর্ভোগের। নৌকাই ছিল যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম।
এমনকি ২০১৭ সালে লাগাতার ভারি বৃষ্টি বর্ষনের ফলে জামিআর গোটা পরিবেশ প্লাবিত হয়ে যায়,এবং মাদরাসা ও মসজিদের ফ্লোর হাটু পানিতে তলিয়ে যায়,তখন পড়া-লেখার ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে ছাত্র- উস্তাদ সকলে ফতুল্লা-নয়ামাটি তাবলীগী মার্কাযে পাwo জমিয়ে দীর্ঘ GK মাস পর্যন্ত অবস্থান করেন।
মজার ব্যাপার হচ্ছে এ কোমর পানির মধ্যেই জামিআর বহুতল ভবনের নির্মানাধীন প্রথম তলার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়, কিন্তু জলাবদ্ধতার এই কঠিন পরিস্থিতে কাজটি মোটেও সহজ ছিলনা, এখানেও চরম কষ্ট মুজাহাদার নজরানা পেশ করতে হয়েছে,ছাদে রড বাধার কাজ সম্পন্ন,কিন্তু তলিয়ে যাওয়া রাস্তা দিয়ে বালু, সিমেন্টের গাড়ি আসা অসম্ভব হয়ে পড়ে।তখন ছাত্র- শিক্ষক সকলে মিলে মাথায় করে, কাধে করে এবং নৌকায় করে মালামাল বহনের যেই বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করেছে সে দৃশ্য আজও চোখের সামনে জলজল করছে।
যাইহোক আলহামদুলিল্লাহ আজ দশ বৎসর যাবৎ জামিআর যাবতীয় কার্যক্রম নিজস্ব জায়গায় অত্যন্ত সুন্দর ও সুশৃঙ্খল ভাবে পরিচালিত হচ্ছে,এখানে আসার পর বড় হুজুরের নিরলস প্রচেষ্টা ও দোআ কান্নাকাটির ফলে আল্লাহ পাকের নিজ করমে জামিআর পড়ালেখা, তালীম তরবিয়ত ও পরিধি সম্প্রসারণসহ সার্বিক বিষয় উন্নতি অগ্রগতির একেক সিড়ি অতিক্রম করতে থাকে।
বর্তমানে জামিআর যাবতীয় কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
তামীরাতঃ
নিজস্ব জায়গায় জামিআর সর্বপ্রথম অবস্থান ছিল মাত্র দেড় বিঘা জমির ছোট্ট পরিসরে, বর্তমানে আল্লাহর মেহেরবানীতে প্রায় চার বিঘা জায়গা জুড়ে এর পরিধির বিস্তৃতি ঘটেছে, পরিসর আরো সম্প্রসারণের ভবিষ্যত পরিকল্পনা রয়েছে, পুরাতন টিনশেডের পাশাপাশি একটি তিন তলা ভবন ও ছয় সহস্রাধিক স্কয়ার ফিটের নির্মাণাধীন আট তলা ভবনের সম্পন্ন Qq তলায় বর্তমানে শিক্ষা `xক্ষা ও প্রkvmনিক কার্যক্রম চালু রয়েছে,, বিয়াল্লিশ শতাংশ জায়গার মধ্যে তের হাজার স্কয়ার ফিটের সুবিশাল দৃষ্টি নন্দন মসজিদ নির্মাণের মাস্টার প্ল্যানও ইZg‡a¨ গ্রহণ করা হয়েছে। আল্লাহ যেন সবকিছুর আসান ইন্তেযাম করে দেন। আমীন।
তালীমাতঃ
নিজস্ব জায়গায় আসার পর প্রথমে মেশকাত জামাত খোলা হয়, অতপর দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) বিভাগ ঐ সকল তালিবুল ইলমদেরকে নিয়েই চালু করা হয় যাদের মাধ্যমে জামিআর কণ্টকাকীর্ণ পথ চলার শুভ সূচনা হয়েছিল।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বড় হুজুরের সুষ্ঠ পরিচালনা ও পরামর্শ ভিত্তিক বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষা-`xক্ষার মানোন্নয়নের ফলে মাদরাসা পরীক্ষাসহ বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক) এর অধীনে অনুষ্ঠিত জাতীয় পরীক্ষায় দেশের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে পাল্লা দিয়ে অত্র জামিআ বরাবরই ঈর্ষYxয় সফলতা অর্জন করে আসছে, এবং ক্রমবর্ধমান মেধাতালিকার সংখা বৃদ্ধির সাথে সাথে বেফাক ভুক্ত প্রায় সকল বিভাগে জামিআর তালিবুল ইলমগণ গোটা বাংলাদেশে প্রথম স্থান লাভের গৌরবও অর্জন করেছে।
উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগঃ
বিগত চার বৎসর পূর্বে দেশের বিজ্ঞ মুফতীয়ানে কেরামের পরামর্শ নিয়ে সুযোগ্য মুশরিফদের তË¡vবধানে জামিআয় দুই বৎসর মেয়াদী দারুল ইফতা (উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ) চালু করা হয়,গবেষণার স্বার্থে নূন্যতম এককোটি টাকার মুল্যবান কিতাবাদি সংগ্রহের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল।
আলহামদুলিল্লাহ ইতিমধ্যেই বিশ লক্ষাধিক টাকা ব্যায়ে তাফসীর,হাদীস, ফিকহ,উসূলে তাফসীর, উসূলে হাদীস, উলুমে হাদীস, উসূলে ফিকহ, তারিখ, মানতেক, বালাগাত, ও ফালসাফাহ সহ সমসাময়িক প্রয়োজনীয় বহু g~ল্যবান দূর্লভ গ্রন্থাদির মাধ্যমে ইফতা বিভাগের গবেষণাগার সমৃদ্ধ করা হয়েছে।
বড় হুজুর (দামাত বারাকাতুহুম) এর তত্তাবধানে একটি বিশ্বমানের স্বতন্ত্র ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার চালু করারও বৃহৎ পরিকল্পনা রয়েছে।
পাঠাগারঃ
দরস তাদরীসের পাশাপাশি বয়ান-বক্তৃতা,চমৎকার উপস্থাপনা ও সাবলীল ভাষায় জাwZর সামনে ইসলামের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে, এবং কলমী শক্তির মাধ্যমে ইসলামী সাহিত্য সংস্কৃতির বিকাশ ঘটিয়ে ইসলামী পুনর্জাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে একদল যোগ্য কg©xবাহিনী গঠনের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয় রাব্বানিয়া ছাত্র পাঠাগার,উন্নয়নমুখী এই পাঠাগারের যাবতীয় কর্মসূচি তালিবুল ইলমদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে।
ছাত্র সংখ্যাঃ
মক্তব হিফজ ও কিতাব বিভাগ সব মিলিয়ে জামিআর বর্তমান ছাত্র সংখ্যা আট শতাধিক,, উস্তাদের অজীফা ও বোর্ডিং খাতে বর্তমানে মাসিক ব্যয় ২৫/২৬ লাখ টাকা। ছাত্রদের মাসিক প্রদেয় বাবদ মাত্র ১০/১১ লাখ টাকার ইন্তেযাম হয়, আর বাকীটা দ্বীন প্রিয় মুসলমানদের স্বতস্ফূর্ত অনুদানে ব্যবস্থা হয়ে থাকে।
ইসলাহী কার্যক্রমঃ
অত্র জামিআয় ঢালকা নগরের হযরত ওয়ালা (দামাত বারাকাতুহুম)এর খেলাফত প্রাপ্ত আট/দশজন শিক্ষকের সাথে সাথে দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আরও বহু বুযর্গানে দ্বীনের খেলাফত প্রাপ্ত শিক্ষক মন্ডলী রয়েছেন,তাদের তত্তাবধানে তালিবুল ইলমরা বাহ্যিক ইলম শিক্ষার পাশাপাশি গ্রহণ করছে আধ্যাত্মিক `xক্ষা।
বিশেষত বড় হুজুর (দামাত বারাকাতুহুম) এর সাপ্তাহিক গুরুত্বপূর্ণ ইসলাহী মজলিসগুলো দিকভ্রান্ত বহু তালিবুল ইলমের জীবনের মোড় পরিবর্তনের মাইল ফলক হিসেবে কাজ করছে, ইসলাহী খুতূতের ধারাবাহিকতায় বড় হুজুরের বাতলানো প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী আত্মিক ব্যাধি নিg~©ল করে বহু তালিবুল ইলম পেয়েছে সুখময় জীবনের সন্ধান,পৌঁছে গেছে সফলতার রাজপথে।
হযরত ওয়ালার নির্দেশক্রমে আপামর জনসাধারণের আত্মশুদ্ধির লক্ষ্যে জামিআর মসজিদ ভিত্তিক মাসিক ইসলাহী মজলিস চালু করা হয়েছে, আল্লাহ প্রেমিক ও সত্যাশ্রয়ী পথভোলা বান্দাদের পদাচারনায় মজলিসগুলো দিন দিন আরও ফায়দা জনক ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে।
দাওয়াত ও তাবলীগঃ
দাওয়াত ও তাবলীগের মাধ্যমে দ্বীন প্রচারের উদ্দেশ্যে সময়ে সময়ে জামিআর পক্ষ থেকে চব্বিশ ঘন্টার জামাত পাঠানো হয়, বিভিন্ন বন্ধে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য জামাত তৈরি করা ছাড়াও দাওয়াত ও তাবলীগের সকল জাতীয়/আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রোগ্রামের সাথে একাত্মতা পোষণ করা হয়।
RvwgAvi Abb¨ ˆewkó¨ :
আলহামদুলিল্লাহ, জামিআ রাব্বানিয়া আরাবিয়া তার অনন্য বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে অতি অল্প সময়ে দেশজুড়ে ব্যপক সুনাম সুখ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি বুযর্গানে দ্বীন-ওলামায়ে কেরামের নেক তাওয়াজ্জুহ লাভ করতে সক্ষম হয়েছে।বড় হুজুর দামাত বারাকাতুহুম এর অকুণ্ঠ স্বীকৃতি,এ সবই আমার রবের দয়া!!
জামিআর নিজস্ব কিছু উসূল- যাওয়াবেত, নিয়ম- কানুন রয়েছে যেগুলো জামিআর প্রাতিষ্ঠানিক সংবিধান রূপে পরিগণিত হয়ে থাকে,এ ছাড়াও সময়োপযোগী যৌক্তিক আইন প্রণয়ন এবং তা শতভাগ বাস্তবায়ন বলতে গেলে জামিআর প্রধান বৈশিষ্ট্য।
জামিআর কোনো কাজ একক সিদ্ধান্ত বা গতানুগতিকভাবে করা হয় না, বরং ছোট বড় সকল বিষয় আসাতিযায়ে কেরামের দীর্ঘ মশওয়ারা সাপেক্ষে সম্পাদিত হয়ে থাকে।
প্রতি শনিবার আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত জামিআর যাবতীয় বিষয়ে,সপ্তাহের একটা নির্দিষ্ট সময়ে তালীমী বিষয়ে এবং অনিবার্য প্রয়োজনে যেকোনো সময় মশওয়ারা হয়ে থাকে।
তালীমাতের যুগপৎ সিদ্ধান্ত ও বলিষ্ঠ শিক্ষা কারিকুলামের মাধ্যমে জামিআর শিক্ষা দীক্ষার মান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে,দারুল ইকামার সজাগ দৃষ্টি ও আসাতিযায়ে কেরামের কড়া নেগরানি সর্বোপরি দফতরে ইহতেমামের সুদক্ষ পরিচালনায় জামিআর যাবতীয় কার্যক্রম অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে ও সুচারুরূপে সম্পন্ন হয়ে থাকে।
জামিআর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তালিমের সাথে তারwবয়েতের সমন্বয়, বড় হুজুর দামাত বারাকাতুহুম প্রায়শই বলে থাকেন,
" নাম হোগা মাদরাসা কা, কাম হোগা খানকা কা"
এই প্রতিষ্ঠান নামে হবে মাদরাসা, কার্যত হবে খানকা।।
বাস্তবেও তাই হচ্ছে। সাপ্তাহিক ইসলাহী মজলিস এবং ইসলাহী খুতূতের বদৌলতে ধীরে ধীরে আমল আখলাকে আকাবিরের রঙে রঙিন একটি নূরানী কাফেলা গড়ে উঠছে।
আসাতিযায়ে কেরামের পারস্পরিক মিল মহব্বত ও সহযোগী মনোভাব হাল যামানায় এক বিরল দৃষ্টান্ত।
ছাত্রদের প্রতি উস্তাদদের অকৃত্রিম স্নেহ মমতা, উস্তাদদের প্রতি ছাত্রদের অতুলনীয় ভক্তি- শ্রদ্ধা এবং স্বতস্ফুর্ত খেদমতের মনোভাব এই যামানায় সত্যিই বিরল!!
এমন আরো বহু বৈশিষ্ট্যে জামিআ রাব্বানিয়া আরাবিয়া বৈশিষ্ট্য মন্ডিত। আল্লাহ অত্র জামিআর সফলতার ধারা অব্যাহত রাখুন এবং সার্বিক লাইনে উন্নতি অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি দান করুন।
ভবিষ্যত পরিকল্পনাঃ
জামিআর প্রাণ পুরুষ, জামিআর স্বপ্নদ্রষ্টা বড় হুজুর (দামাত বারাকাতুহুম ) এর হৃদয়ের আকুতি, তামীরাত, তালীমাত ও তারwবয়াতে অত্র জামিআ যেন আরেকটি দারুল উলুম দেওবন্দে রূপ নেয়,যার সূর্য সন্তানেরা আকাবির ও আসলাফের আদর্শ চেতনা বক্ষে ধারণ করে হকের ঝান্ডা নিয়ে ছুটে যাবে দিক দিগন্তে,ইসলামী চেতনা ছড়িয়ে দিবে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে, যাদের হাত ধরেই ইসলামের হেলালী নিশান পত পত করে উড়তে থাকবে মুক্ত গগনে। ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ পাক জামিআর সকল কার্যক্রমকে আরো গতিশীল ও বেগবান করে দিন,ভবিষ্যত পরিকল্পনাগুলো আসানীর সাথে বাস্তবায়ন করে দিন,প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও শত্রুদের অনিষ্ট থেকে হেফাজত করে কেয়ামত অবধি কায়েম দায়েg রাখুন,,
জামিআর সন্তানদেরকে খাটি ওয়ারিছীনে আম্বিয়া হিসেবে কবুল করে নেন।
কাছে দূরের সকল হিতাকাঙ্ক্ষীকে আল্লাহ তাআলা জাযায়ে খায়ের দান করুন।
সর্বোপরি এই ইলমী উদ্যানের দরদী মালী বড় হুজুর (দামাত বারাকাতুহুম) কে আল্লাহ পাক সুস্থতা ও খেদমতে দ্বীনের সাথে দীর্ঘ নেক হায়াত দান করুন, এবং সকল বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে গৃহিত মিশন নিয়ে অপ্রতিরোধ্য গতিতে সম্মুখ পানে এগিয়ে চলার তাওফীক দান করুন।
আমীন। ইয়া রাব্বাল আলামীন।
রচনায়ঃ
মুহাম্মদ মাহমুদ হাসান রব্বানী
ফাযেল, অত্র জামিআ